ওয়ারেন, ২৬ ফেব্রুয়ারি : নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে মৃধা বেঙ্গলি কালচারাল সেন্টারের উদ্যোগে শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন করা হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে গতকাল রোববার বিকেলে নগরীর ২২০২১, মেমপিস এভিনিউস্থ কালচারাল সেন্টারের হল রুমে এক আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানের শুরুতে বাংলা স্কুল অব মিউজিকের শিল্পীরা সমবেত কন্ঠে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন করে। জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের পর এক মিনিট নীরবতা পালনের মাধ্যমে মহান ভাষা আন্দোলনের শহীদদের আত্মত্যাগের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়। এছাড়া হলরুমে নির্মিত অস্থায়ী শহীদ মিনারে মৃধা বেঙ্গলি কালচারাল সেন্টারের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়েছে।
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সংক্ষিপ্ত আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট চিকিৎসক ও দার্শনিক ড. দেবাশীষ মৃধা। প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. দেবাশীষ মৃধা বলেন, পৃথিবীতে অনেক জাতি স্বাধীনতার জন্য রক্ত দিয়েছে। কিন্তু ভাষার জন্য রক্ত দেওয়ার ইতিহাস অন্য কোনো জাতির নেই। একমাত্র বাঙালি জাতি মাতৃভাষার জন্য রক্ত দিয়েছে। এমন আত্মদান বিশ্বের ইতিহাসে এক বিরল অধ্যায়। অনেক আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমাদের মায়ের মুখের ভাষা বাংলা আজ আর্ন্তজাতিক দরবারে মাতৃভাষা হিসাবে স্বীকৃতি পেয়েছে। এজন্য আমরা বাঙালি জাতি হিসেবে গর্বিত। শহীদরা আমাদের বিশ্বের সম্মানজনক এক স্থানে পৌঁছে দিয়েছে। সার্থক হয়েছে তাদের রক্তদান।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের শুরুতে সুকন্যা শুক্লার কোরিওগ্রাফিতে ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙ্গানো একুশে ফেব্রুয়ারী...’ গানের সঙ্গে সমবেত নৃত্য পরিবেশন করে মৃত্তিকা সরকার, অর্পিতা সেন, আরুশি সেন, মাহিকা সরকার।
একক সঙ্গীত ‘আমি বাংলায় গান গাই...’ পরিবেশন করেন আদ্রিজা চক্রবর্তী। ‘বাংলার মাটি বাংলার জল...’ গানটি পরিবেশন করেন সঙ্গীতা পাল, সুস্মিতা চৌধুরী পরিবেশন করেছেন ‘ও আমার দেশের মাটি...’ গানটি। কবিতা আবৃত্তি করেছেন অনন্ত সাইফ, পপি দাস ও জনা দাস।
দলীয় নৃত্য ‘কারার ঐ লৌহ কপাট...’ পরিবেশন করেন মৃত্তিকা সরকার, অর্পিতা সেন। ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙ্গানো একুশে ফেব্রুয়ারী...’ ভায়োলিনের সুরে দর্শকদেরকে মুগ্ধ করেছে সামান্তা চৌধুরী মেগা।
মহুয়া দাস সরকারের কোরিওগ্রাফিতে ‘দে তালি বাঙ্গালী...’ দলীয় নৃত্য পরিবেশন করেন স্নেহা দাস, হৃদিতা দাস, সৃজিতা রায়, দেবশ্রী রায়। দ্বৈত নৃত্য পরিবেশন করেন নিবেদিতা বড়ুয়া ও মহুয়া দাস সরকার। অনুষ্টানে একক গান পরিবেশন করেন অভিষেক বালা ও অনামিকা রায়।
বাংলা স্কুল অব মিউজিকের ক্ষুদে শিল্পীরা বেশ কটি একক ও কোরাস সঙ্গীত পরিবেশন করেছে। সবশেষে মিশিগানের ব্যান্ড দল হৃদম অব বাংলাদেশ বেশ কয়েকটি গান গেয়ে গান গেয়ে দর্শকদের মুগ্ধ করেছে। সকল শিশু শিল্পীদের মৃধা বেঙ্গলি কালচারাল সেন্টারের পক্ষ থেকে মেডেল প্রদান করা হয়। শিল্পীদের মেডেল পরিয়ে দেন ড. দেবাশীষ মৃধা, সুপ্রভাত মিশিগান সম্পাদক চিন্ময় আচার্য্য, পূর্নেন্দু চক্রবর্তী অপু এবং মৃদুল কান্তি সরকার।
অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেন মৌসুমী দত্ত। সাউন্ড ইন্জিনিয়ারিং এ ছিলেন রাজর্সি চৌধুরী গৌরব। সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন মৃধা বেঙ্গলি কালচারাল সেন্টারের চিফ কর্ডিনেটর মৃদুল কান্তি সরকার।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Suprobhat Michigan